হযরত বড়পীর (রহঃ)-এর গুণাবাচক নাম
এই পৃথিবীর সাধারণ মানুষের নিকট হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) বলে পরিচিতি
হলেও খােদাভক্ত মহৎপ্রাণ সুধীমণ্ডলীরা তাকে বিভিন্ন গুণবাচক নামেও ভূষিত করেছেন। সে সকলগুণবাচক নামসমূহ নিচে দেওয়া হল-
১. কুতুবুল আযম বা বড়পীর (রহঃ), ২. কোন এলাকায় মাহবুবে সােবহানী নামে পরিচিত,
৩. কারও কারও কাছে নূরে ইয়াজদামী নামে পরিচিত, ৪. আবার কেউ কেউ তাকে কুতুবে রব্বানী
নামেও অভিহিত করেন, ৫. আফকালুল আউলিয়া দস্তগীর নামেও তিনি পরিচিত, ৬. গাউসুল
আযম মুহীউদ্দিন নামে তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন,
বাল্যকাল
গাওসুল আযম বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-এর বাল্যজীবন অত্যন্ত আনন্দপূর্ণ ছিল।
সেই সময়ের শ্রেষ্ঠ তাপস পিতা-মাতার ক্নেহ যত্ন এবং সতর্ক দৃষ্টির মধ্য দিয়ে
তিনি বয়প্রাপ্ত হতে লাগলেন। তাঁর মুখের মধুমিশ্রিত কথা শুনে পিতামাতার হৃদয় আনন্দে পরিপূর্ণ
হয়ে গেল। কোন এক সময় তিনি শুধু নানা শব্দ উচ্চারণ করতে আরম্ভ করলেন। তার মাতা
বুঝতে পারলেন যে, তার স্নেহের সন্তান তার নানাজানের কিছু কারামত শুনতে চায়। তিনি পুত্রকে
উদ্দেশ্য করে অতি কোমল কণ্ঠে বললেন, তােমার নানাজান একজন বিখ্যাত দরবেশ ছিলেন।
কারামত আমরা চোক্ষে দেখেছি। তার ভক্তদের একটি কাফেলা সমরখন্দ যাওয়ার উদ্দেশ্যে
মরুভূমির মধ্য দিয়ে পথ অতিক্রম করছিল। এমন সময় একদল দস্যু ও নিষ্টুর দুবৃত্ত তাদেরকে
অতীকতে আক্রমণ করল। অস্ত্র হাতে ডাকাত দল চারদিক হতে তাদেরকে ঘরে ধরল। দস্যুদের
হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন পথই তারা পেলনা। অবশেষে তারা তাদের পরি ও তােমার
নানাজান হযরত আবদুল্লাহ সাউসেরী (রহঃ)-কে ডাকতে লাগলেন। এমন সময় মরু অঞ্চলে
বিদ্যুৎ চমকানীর মত আলাের ঝলক দেখা গেল । এতে ডাকাত দল ভয় পেয়ে গেল। হঠাৎ চোখ
খুলে দেখল যে তীব্র ধারাল তলােয়ার হাতে আগুনের মত চেহারা করে হযরত আবদুল্লাহ সাউমেরী
(রহঃ) দাড়িয়ে আছেন। তার তেজোদীপ্ত অবয়ব দেখে ডাকাতের আরও ভয় পেয়ে গেল। তখন
তিনি ডাকাত দলকে বললেন, হে দস্যুদল! তােমরা জেনে রাখ যে, দয়াময় আল্লাহ পবিত্র, ও
অদ্বিতীয়। সুতরাং এ মুহূর্তে তােমরা ডাকাতি করা বন্ধ করে দাও। তােমরা পবিত্র পথে অগ্রসর
হও। এ বলে তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। তারপর ডাকাতদল অনুতাপের আগুনে দগ্ধ হয়ে জিলান
শহরে এসে উপস্থিত হল এবং তােমার নানাজানের হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করে আল্লাহর
ধ্রানে জীবন অতিবাহিত করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
0 Comments
Please Don't Send Any Spam Link